পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম
পাসপোর্ট তৈরি করার নির্দিষ্ট সময় পর পাসপোর্টটি আবার রিনিউ করতে হয়। এছাড়াও আপনার পাসপোর্টে যদি কোন প্রকারের ভুল তথ্য দেওয়া হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে সে তথ্যটিও আপনি সংশোধন করতে পারেন। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এই সময়সীমা ১০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে । প্রতি ১০ বছর পর পর আপনার পাসপোর্টটি পুনরায় সংশোধন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে অতিরিক্ত কোন চার্জ প্রদান করতে হবে না। শুধুমাত্র পাসপোর্ট ফি প্রদান করতে হবে।
পাসপোর্ট সংশোধনের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন
সর্বশেষ ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ পাসপোর্ট সংশোধন বিষয়ে একটি নোটিশ প্রকাশ করেছে। এই নোটিশের মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে পাসপোর্ট সংশোধন করার সম্পূর্ণ নিয়মকানুন স্পষ্ঠ করেছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশী নাগরিকদের ভোটার আইডি কার্ড ও পাসপোর্টের মধ্যে তথ্যের গরমিল হলে জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদত্ত তথ্য (নাম, পিতা-মাতার নাম, বয়স ইত্যাদি) অনুযায়ী পাসপোর্ট রি-ইস্যু করতে হবে। তবে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদ প্রয়োজন হবে। বিশেষ প্রয়োজনে জেএসসি/জেডিসি/ এসএসসি/ দাখিল/ কারিগরি/ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও সমমানের যে কোন একটি সনদপত্র বিবেচনা করা যেতে পারে। পাসপোর্ট সংশোধনের ক্ষেত্রে লিখিত আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রের সাথে অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট/ সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে প্রদর্শিত নমুনা অনুযায়ী আবেদনকারীকে একটি অঙ্গীকারনামা যথাযথভাবে পূরণ ও স্বাক্ষরপূর্বক দাখিল করতে হবে।
সুরক্ষা সেবা বিভাগ হতে ২৮/০৪/২০২১, ৯/১২/২০২১ এবং ০৩/১১/২০২২ খ্রিস্টাব্দ তারিখে জারীকৃত এতদসংক্রান্ত পরিপত্রসমূহ বাতিল করা হলো।
যথাযথ কতৃপক্ষে অনুমোদনক্রমে জারীকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
চলুন জানা যাক পাসপোর্ট রিনিউ করতে বা পাসপোর্ট সংশোধন করতে কি কি কাগজ বা ফাইল লাগে এবং অনলাইনের মাধ্যমে কিভাবে পাসপোর্ট রিনিউ অথবা সংশোধন করার জন্য আবেদন করতে হয়।
পাসপোর্ট সংশোধনের ক্ষেত্রে কি কি প্রয়োজন
*পাসপোর্ট রিনিউ অথবা সংশোধন করার জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন জাতীয় পরিচয় পত্র। তবে আপনি যদি প্রাপ্তবয়স্ক না হন সে ক্ষেত্রে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের পরিবর্তে জন্ম নিবন্ধন এর মাধ্যমে আপনার আবেদনটি করতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনার জন্ম নিবন্ধন অথবা জাতীয় পরিচয়পত্রের দেওয়া তথ্য গুলো সঠিক আছে কিনা।
*আবার আপনি যদি বিদেশের দূতাবাসে আবেদন করতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার এই কার্ডগুলোর যেকোনো একটি যথাযথ প্রমাণ সহকারে প্রয়োজন হবে ।কার্ডগুলো হলpermanent resident card/student id card/job id card/driving licence.
*অতিরিক্ত ডকুমেন্ট হিসেবে আপনার শিক্ষা সনদ এবং আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র থাকা সত্ত্বেও জন্ম সনদ ও প্রয়োজন হতে পারে।
*আপনাকে লিখিত আবেদন করতে হবে
*এছাড়াও প্রয়োজন পূর্বে অঙ্গীকারনামা
*এছাড়াও আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যা হল আপনার পুরাতন পাসপোর্ট এর কপি এবং পাসপোর্ট
আপনার পাসপোর্টে যদি জন্ম তারিখের সংশোধন করার প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে নিম্নের ধাপগুলো অবলম্বন করতে হবে
*আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ওপর ভিত্তি করে আপনার জন্ম তারিখ পরিবর্তন করতে হবে
*এই সংশোধনের সাপেক্ষে অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র লাগবে।
*এছাড়াও অতিরিক্ত ডকুমেন্ট হিসেবে জেএসসি/এসএসসি/এইচএসসি/কারিগরি/দাখিল/উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং সমমান পরীক্ষার সনদপত্রের প্রয়োজন হতে পারে।
*আবার আপনি যদি অপ্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার পাসপোর্ট এর জন্ম তারিখ পরিবর্তনের জন্য জাতীয় পরিচয় পত্রের পরিবর্তে আপনার জন্ম নিবন্ধন কে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
আপনার পাসপোর্টে যদি নাম সংশোধনের প্রয়োজন পড়ে সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই নিম্নোক্ত ধাপগুলো জেনে নিতে হবে
*পাসপোর্ট এর নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে নিজের নাম এবং পিতার নামের সংশোধন করা যায়।
*পাসপোর্ট এর নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদদের ও প্রয়োজন পড়বে।
*আবার আপনি যদি অপ্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার জন্ম সনদের প্রয়োজন পড়বে।
পাসপোর্ট সংশোধন করতে আমাদের কি কি নিয়ম জানা প্রয়োজন
আমরা জানি পাসপোর্ট দুই রকমের হয়ে থাকে MRP/E passport. এখন এই দুইটি পাসপোর্ট এর মধ্যে যেকোনো একটি পাসপোর্ট সংশোধন করার ক্ষেত্রে অথবা রিনিউ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই অনলাইন আবেদন করতে হবে। আপনি যদি ই পাসপোর্ট আবেদন করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সকল তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্রের উপর ভিত্তি করে দিতে হবে। আপনার আবেদনটি যেহেতু সংশোধন অথবা রিনিউ আবেদন সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে id documents পুনরায় পাসপোর্ট এর তথ্য দিয়ে আবেদনটি submite করতে হবে।
পাসপোর্ট সংশোধনবা রিনিউ করার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ধাপগুলো অবশ্যই আমাদের জানতে হবে
*পাসপোর্ট রিনিউ অথবা সংশোধনের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে।
*আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা যতদূর পর্যন্ত তার সকল সনদ গুলো সঠিক তথ্য অনুসারে উপস্থাপন করতে হবে।
*এছাড়াও আপনার জন্ম নিবন্ধন এর সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে।
*আবার আপনি যদি বিদেশে দূতাবাসের আবেদন করতে চান সে ক্ষেত্রে permanent resident card/student id card/job ID card/driving licence এর কপিগুলো সঠিকভাবে সংগ্রহ করে উপস্থাপন করতে হবে।
*অবশ্যই আপনাকে অনলাইন এর মাধ্যমে পাসপোর্ট সংশোধন বা রিনিউয়ের জন্য আবেদন করতে হবে।
*নির্ধারিত পাসপোর্ট এর ফি অবশ্যই পরিশোধ করুন।
*আপনার পাসপোর্টটি যদি সংশোধন করতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে লিখিত আবেদন করতে হবে।
*এছাড়াও আপনাকে একটি অঙ্গীকারনামা তৈরি করতে হবে এবং অঙ্গীকারনামাটি পূরণ এবং স্বাক্ষর করে আবেদন ফরমের সাথে জমা দিতে হবে।
*এরপর আপনার পাসপোর্ট সংশোধনের অঙ্গীকারনামাটি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করুন। এবং আপনার যাবতীয় সকল কাগজপত্র একত্রিত করে জমা দিন।
একটি পাসপোর্টে সংশোধন অথবা রিনিউ করতে আপনার কত খরচ পড়বে
একটি নতুন পাসপোর্ট করতে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী নির্ধারিত খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে ৪,০২৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০,৩৫০ টাকা (ভ্যাট)।পাসপোর্ট রিনিউ অথবা সংশোধন করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কোন চার্জ প্রদান করতে হয় না তবে নতুন পাসপোর্ট এর জন্য নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হয়।
সকালের মানে একটি কমন প্রশ্ন থাকে কিভাবে পাসপোর্ট টি সংশোধন করব??
আপনার পাসপোর্টটি সংশোধন করার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আপনাকে শিওর হতে হবে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের সকল তথ্য সঠিক আছে কিনা। এরপর আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে অনলাইনের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট এর আবেদন করতে হবে। এরপর আপনাকে ফ্রি প্রদান করতে হবে। এবং আপনার আবেদন পত্রের প্রিন্ট সংগ্রহ করতে হবে। আপনার প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রের সাথে আবেদন পত্রের কপিটি একত্রিত করে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে।