অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম

ভোটার আইডি কার্ড 

আমাদের অনেকেরই ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র বিভিন্ন ভুল থাকে | আমরা জানি না কিভাবে এগুলো সংশোধন করব | আইডি কার্ডে আমাদের যে সকল ভুলগুলো থাকতে পারে তা হলো | জন্মতারিখ ভুল, নামের বানান ভুল, অথবা বাবা মায়ের নাম ভুল ইত্যাদি | আর আমরা সকলেই জানি ভোটার আইডি কার্ড আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ | সুতরাং এখানে যদি ভুল থাকে তাহলে এর জন্য আমাদের বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় | তাই আমাদের এই সম্পর্কে জানা উচিত এবং সংশোধন কিভাবে করতে হয় সেই সম্পর্কে জানা উচিত | চলুন অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে আসি |

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে

 যে কোন জিনিস এর সমস্যা হলে তা সংশোধন করতে অর্থের প্রয়োজন হয় | সুতরাং আমরা সর্বপ্রথম জেনে নিব ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকার প্রয়োজন হতে পারে | ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে বিভিন্ন  তথ্যের জন্য বিভিন্ন রকম অর্থের প্রয়োজন হয় |

যেমন,  আবেদনের ধরন এবং বিতরণের ধরন অনুযায়ী কত টাকা খরচ হবে তা  নির্ধারিত হবে | একেক ধরনের আবেদনের জন্য বা সংশোধনের জন্য একেক রকম  ফি নির্ধারণ করা হয়েছে | ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে সেটা জানার পূর্বে চলুন জেনে আসি জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের জন্য আবেদনের ধরন কয় রকমের রয়েছে |

 পরিচয় পত্র সংশোধনের জন্য আবেদনের ধরন

 মূলত আপনারা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে পারবেন চার রকম ভাবে |

  1.  জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন
  2.  অন্যান্য সংশোধন
  3.  জাতীয় পরিচয় পত্র ও অন্যান্য সংশোধন
  4.  রিইস্যু 

 এ প্রতিটি অন্যান্য  আবেদনের জন্য আলাদা আলাদা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে চলুন এবার সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক |

ভোটার আইডি কার্ড কোন সংশোধনের জন্য কত টাকা লাগে

  1. জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন

 জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের জন্য ডেলিভারি ফি ৩৪৫ টাকা এর প্রয়োজন হবে | অর্থাৎ আমরা বুঝতে পারছি যদি আমরা জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে চাই সে ক্ষেত্রে আমাদের ৩৪৫ টাকা লাগবে |

  1. অন্যান্য সংশোধন

 অন্যান্য তথ্য সংশোধন এর ক্ষেত্রে সাধারণ স্মার্ট কার্ড ডেলিভারি ফি 230 টাকা এর প্রয়োজন হয় |

  1. জাতীয় পরিচয় পত্র ও অন্যান্য সংশোধন

 জাতীয় পরিচয় পত্র ও অন্যান্য তথ্য সংশোধনের জন্য সাধারণ স্মার্ট কার্ড ডেলিভারি ফি 575 টাকা এর প্রয়োজন হবে |

  1. রিইস্যু 

 রিইস্যু এর জন্য সাধারণ স্মার্ট কার্ড ডেলিভারি টি ২৩০ টাকা এর প্রয়োজন হয় |

 ইতিমধ্যে আমরা ভোটার আইডি কার্ড কোন ধরনের সংশোধনের জন্য কত টাকা লাগে তা সম্পর্কে জানিয়েছে এবং প্রমাণ সহকারে একটি করে ফটো দিয়েছি | আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য কত টাকা খরচ হয় বা খরচ হতে পারে |

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয়

 আইডি কার্ড সংশোধন করতে মূলত বেশ কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয়ে থাকে | যে সকল ডকুমেন্টসগুলো ছাড়া আইডি কার্ড সংশোধন করা সম্ভব না | সর্বপ্রথম আপনার ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন কপি প্রয়োজন হবে, অতঃপর শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ / ড্রাইভিং লাইসেন্স বা পাসপোর্ট, বিয়ে করে থাকলে বিয়ের কাবিননামা, পিতা-মাতার আইডি কার্ড ও সন্তানদের আইডি কার্ড যদি থাকে, সন্তান না থাকলে পিতা মাতার আইডি কার্ড, এই সবগুলোর মধ্যে দুই থেকে তিনটা ডকুমেন্ট দিয়ে এনআইডি কার্ড সংশোধন করা সম্ভব |

 যেমন,  জন্ম নিবন্ধন, সার্টিফিকেট, এবং বাবা, মায়ের পরিচয় পত্র |

 তবে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের  ধরনের উপর নির্ভর করে ডকুমেন্টস পরিবর্তন হতে পারে | নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো |

  আপনার নাম সংশোধন

  •  যদি আপনার নাম ভুল হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনার এসএসসি বা এইচএসসির সার্টিফিকেট এর প্রয়োজন হবে |
  •  জন্ম নিবন্ধন সনদের প্রয়োজন হবে |
  •  যদি আপনি বিবাহ করে থাকেন সে ক্ষেত্রে বিবাহ কাবিননামা প্রয়োজন হয় |
  •  আপনার পিতা-মাতার  পরিচয় পত্রের প্রয়োজন হবে |

 পিতা-মাতার নাম সংশোধন

  •  এক্ষেত্রে আপনার এসএসসি বা এইচএসসি অথবা সমমানের সনদের প্রয়োজন হবে |
  •  জন্ম নিবন্ধন এর প্রয়োজন হবে |
  •  পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র এর প্রয়োজন হবে / এছাড়াও জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হতে পারে |
  •  আপনি যদি চাকরিজীবী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার চাকরির প্রমাণস্বরূপ  তথ্যের প্রয়োজন হবে |
  •  উত্তোলন পত্র বা ওয়ারিশ নামে এর প্রয়োজন হবে |

 জন্ম তারিখ সংশোধন

 জন্ম তারিখ যদি কারো ভুল হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে যদি সে সংশোধন করতে চাই নিম্নোক্ত ডকুমেন্ট গুলো প্রয়োজন হবে |

  •  অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ |
  •  এসএসসি বা এইচএসসি সার্টিফিকেট |
  •  বিবাহ করে থাকলে তার কাবিননামা |
  •  কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়ন |
  •  যদি পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে সেগুলো |

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন

 সর্বপ্রথম আপনাকে আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য এই ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করতে হবে | অথবা আপনারা google এ গিয়ে এনআইডি লিখে সার্চ দিয়ে যেই ওয়েবসাইট সর্বপ্রথম আসবে সে ওয়েবসাইট থেকে প্রবেশ করবেন | নিচে ছবির মাধ্যমে দেখিয়ে দেওয়া হলো |

 অতঃপর আপনারা এন আই ডি নাম্বার জন্ম তারিখ এবং ঠিকানা দিয়ে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করবেন | তারপরে ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে আপনার প্রোফাইলে যাবেন | চলুন ধাপে ধাপে বিস্তারিতভাবে দেখিয়ে দি |

ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর করণীয় কি

 প্রবেশ করার পরে আপনাদের কাছে এমন একটি ইন্টারফেস আসবে | এখানে আপনারা উপরের দিকে  বাম পাশে দেখতে পাচ্ছেন এনআইডি অনলাইন সার্ভিস ওখানে ক্লিক করবেন | অতঃপর আপনাদেরকে নিম্নের ছবির মত অন্য আরেকটি ইন্টারফেসে নিয়ে যাওয়া হবে |

 এখানে  আপনাদের যদি রেজিস্ট্রেশন করা না থাকে সেক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন করবেন | আর রেজিস্ট্রেশন করা থাকলে লগইন করবেন |

 রেজিস্ট্রেশন করবেন কিভাবে

 নিম্নোক্ত বিষয়গুলো সঠিকভাবে পূরণ করে সাবমিট করলে আপনার রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাবে |

 রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার পরে আপনি ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করবেন |

 লগ ইন

 লগইন করার পরে আপনাদের কাছে এমন একটি নতুন ইন্টারফেস আসবে | সেখানে আপনারা আপনাদের ছবি এবং আপনাদের ভোটার আইডি কার্ডের বিস্তারিত তথ্য দেখতে পাবেন | অর্থাৎ আপনি আপনার প্রোফাইল দেখতে পাবেন | তারপরে আপনারা প্রোফাইল বিস্তারিত লেখা থাকবে ওখানে ক্লিক করবেন |  অতঃপর আপনারা এডিট নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন | এখান থেকে মূলত আমাদের সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে |

এনআইডি কার্ড সংশোধন

 সংশোধন করার জন্য আপনাকে প্রোফাইল অপশন এ গিয়ে এডিট অপশনে ক্লিক করবেন | তারপর আপনারা নিম্নোক্ত ছবির মত একটি  ইন্টারফেস দেখতে পাবেন।

 এখানে আপনারা আপনাদের তথ্যগুলো সঠিকভাবে এবং যেভাবে বলা হয়েছে ঠিক সেভাবেই বসিয়ে দেবেন | সঠিকভাবে বসানোর পরে পরবর্তীতে ক্লিক করবেন | তারপরে আপনাদেরকে বিকাশ অথবা নগর অথবা অন্য কোন উপায়ে ফি প্রদান করতে হবে | ফি প্রদান করা হলে আপনি যেখানে সংশোধন করেছিলেন সেখানে গিয়ে একবার রিলোড করবেন | তাহলে আপনারা দেখতে পারবেন আপনার অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে অর্থাৎ আপনার টাকাটা এড হয়ে গেছে |

 তারপরে আবার এডিট অপশনে ক্লিক করবেন | তারপরে একটু নিচের দিকে নেমে বহাল অপশনটিতে ক্লিক করবেন |

 অতঃপর আপনাদেরকে আরেকটি নতুন পেজে এ নিয়ে যাওয়া হবে | তারপরে আবার আপনারা আপনাদের প্রোফাইলটা দেখতে পারবেন | তারপরে আপনি যে স্থানটি পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন সেই স্থানটিতে একটি টিক মার্ক দিয়ে দিবেন | যেমন,

 তারপরে পরবর্তী বাটনে একটি ক্লিক  করবেন | তারপরে আরেকবার দেখে নেবেন আপনার আগেরটা আর পরেরটা ঠিক রয়েছে কিনা | অর্থাৎ আপনার যেটা ভুল ছিল আর পরে যেটা সঠিক দিয়েছেন সেটা ঠিক আছে কিনা | যদি ঠিক থাকে তাহলে পরবর্তীতে ক্লিক করবেন | তারপরে আপনার কাছে আপনি যে টাকা পরিশোধ করেছেন সেই টাকাটি ডিপোজিট দেখাবে |

 তারপরে আর একটু নিচে নামলে আপনারা আবেদনের ধরন এবং বিতরণের ধরন দেখতে পাবেন | সেখানে আপনারা আপনাদের ধরনটি সেট করে দেবেন |

 তারপরে পরবর্তীতে ক্লিক করবেন | তারপরে আপনাদেরকে নতুন আরেকটি পেজে নিয়ে যাওয়া হবে | নিচে তার ছবি দেওয়া হল |

 এই পেজে এসে  আপনাকে আপনার কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট আপলোড করতে বলছে | এখানে এসে আপনারা আপনাদের এডমিট কার্ড এড করতে পারবেন | অথবা ওখানে যে আপনার ক্লিক করলে অনেক অপশন দেখতে পারবেন | সেই সকল অপশন গুলোর মধ্য থেকে দুই থেকে তিনটা বা আরো বেশি পারলে আরো ভালো | অর্থাৎ যতটা পারেন ডকুমেন্ট দেবেন | 

 সকল তথ্য দেওয়া হয়ে গেলে সাবমিট করে দেবেন | তারপরে আপনারা ডাউনলোড নামে আরেকটা অপশন দেখতে পাবেন |

 এখান থেকে ডাউনলোড অপশন এ ক্লিক করবেন | সেখানে আপনারা পিডিএফ আকারে একটি অ্যাপ্লিকেশন দেখতে পাবেন | এটা আপনারা মোবাইলে অথবা কম্পিউটারে সেভ করে রাখবেন | কারণ এটা পরবর্তীতে প্রয়োজন হতে পারে | এতক্ষন পর্যন্ত আপনি যে সকল অ্যাপ্লিকেশন করলেন এটা তার প্রমাণ। সকল অ্যাপ্লিকেশন সম্পন্ন হয়ে গেলে আপনার নিচে পেন্ডিং লেখা দিবে অর্থাৎ আপনার সকল কাজ শেষ | পরবর্তীতে আপনাকে আপনার নাম্বারে মেসেজ দিয়ে জানিয়ে দেয়া হবে | ততদিন পর্যন্ত আপনার আর কোন কাজ নেই |  আজকের এই আর্টিকেল থেকে যদি আপনারা সামান্য পরিমাণে উপকৃত হয়ে থাকেন তবে আমাদের সঙ্গে থাকবেন |

ই পাসপোর্ট করার নিয়ম

Scroll to Top