আজকে আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব করোসল ফলের দাম কত-করোসল ফল কি ক্যান্সার প্রতিরোধী। তাই আমাদের সাথে থাকুন। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন করোসল ফলের দাম কত-করোসল ফল কি ক্যান্সার প্রতিরোধী। চলুন তাহলে আর দেরি না করে, জানা যাক করোসল ফলের দাম কত এবং করোসল ফল কি ক্যান্সার প্রতিরোধী এই বিষয় সম্পর্কে।
পেজ সূচিপত্র
করোসল ফলের পুষ্টি উপাদান
করোসল ফল তীব্র গন্ধ যুক্ত একটি ওষুধি ফল। যা বিভিন্ন পুষ্টি গুনে ভরপুর। করোসল ফল খেলে আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। করোসল ফল কাটা বিশিষ্ট । করোসল ফল বাহিরে থেকে কাঁঠালের মত দেখতে এবং ভিতরে তরমুজের মত দেখতে তবে সাদা রঙের।
করোসল ফলের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানতে অনেকেই আগ্রহী। আপনি যদি করোসল ফলের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন তাহলে আর্টিকেল টি পড়তে থাকুন। করোসল ফলের পুষ্টি উপাদান হিসেবে রয়েছে ভিটামিন সি , ভিটামিন বি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট ইত্যাদি। প্রতি ১০০ গ্রামে থাকা করোসল ফলের পুষ্টি উপাদান নিচে তুলে ধরা হলো:
- চর্বি – ০.২ গ্রাম
- প্রোটিন – ০.৮ গ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম – ২৩৩ মিলিগ্রাম
- ফসফরাস – ১৯ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম – ২৫০ মিলিগ্রাম
- ফলিক এসিড – ১৪ এমসিজি
- ভিটামিন সি – ১৯ মিলিগ্রাম
- এনার্জি – ৬৪ ক্যালোরি
- ফাইবার – ১.৮ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট – ১৫.৩ গ্রাম
- ক্যালসিয়াম – ৪০ মিলিগ্রাম; ইত্যাদী।
করোসল ফল কোথায় পাওয়া যায়
করোসল ফলের অপর নাম সাওয়ার সোপ, গ্রাভিওলা, ব্রাজিলিয়ান পাও পাও, গুয়ানাভা, টক আতা। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় করোসল ফল পাওয়া যায়। বিশেষ করে আমাজন নদীর উপত্যকা দক্ষিণ আমেরিকার অঞ্চলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে করোসল ফল চাষ হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোসল ফল খেলে ক্যান্সার রোগের কেমোথেরাপির প্রয়োজন পড়ে না। আই দিন দিন করোসল ফলের চাহিদা ও যার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চীন, ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা, ভারত এসব দেশে করোসল ফল জন্মায়। সুখবর যে বর্তমানে করোসল গাছের চাষের হার আমাদের দেশে বেড়েই চলেছে। বর্তমানে আমাদের দেশে বিভিন্ন জেলায় করোসল গাছ চাষ হচ্ছে। যেমন: রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা, বরিশাল ইত্যাদি। তাই বিশ্বের অন্যান্য জায়গার মতো আমাদের দেশেও করোসল ফল পাওয়া যায়। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন যে করোসল ফল কোথায় পাওয়া যায়?
করোসল ফল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়
করোসল ফল ক্যান্সার রোগের জন্য উপকারী হওয়ায় এর জনপ্রিয়তার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক ক্যান্সার রোগী করোসল ফলের সন্ধানে নেমে পড়েছেন। এখন অনেকের মনে প্রশ্ন জাগবে যে : করোসল ফল বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায়? বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় করোসল ফল চাষ হচ্ছে। যেমন: রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা, বরিশাল, বরগুনা, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, নীলফামারী ইত্যাদি জেলায়।
তথ্য অনুযায়ী সাতক্ষীরার মঞ্জিতপুরে ও নীলফামারীর খড়িবাড়ি এলাকায় করোসল ফলন শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা তার আগ্রহের কারণে বিভিন্ন দেশ ঘুরে করোসল ফলের চারা সংগ্রহ করেন। আবার আপনি চাইলে করোসল গাছের কলম কিনতে পারবেন। ‘ রাজশাহীর পণ্য ‘ নামের একটি ফেসবুক পেজ রয়েছে। এই পেজটি করোসল ফলের চারা ও কলম বিক্রি করে। আপনি দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে অনলাইনে হলে করোসল চারা ও কলম কিনতে পারবেন না। অর্থাৎ বর্তমানে করোসল ফল বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায়।
করোসল ফলের দাম কত
একটি করোসল ফল ৪০০ গ্রাম থেকে এক কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি রোগ। আর বর্তমানে প্রমাণিত হয়েছে যে করোসল ফল ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে খুবই কার্যকর। তাই করোসল ফলের দাম অনেক চওড়া। করোসল ফল চাষের জন্য নির্দিষ্ট আবহাওয়ার প্রয়োজন হয়। তাই করোসল ফলের চাষের সংখ্যা কম। এইসব কারণে করোসল ফলের দাম বেশি।
প্রতি কেজি করোসল ফলের দাম ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। বাজার দর অনুযায়ী করোসল ফলের দাম কম বেশি হতেই পারে। আপনি চাইলে বিভিন্ন অনলাইন পেজ থেকে করোসল গাছের কলম কিনে করোসল ফল চাষ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রতিটি কলম গাছের দাম ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আশা করি আপনি করোসল ফলের দাম কত হতে এই বিষয়ে কিছুটা ধারণা পেয়েছেন।
করোসল ফল কি ক্যান্সার প্রতিরোধী
হ্যাঁ, করোসল ফল কি ক্যান্সার প্রতিরোধী। করোসল ফল ক্যান্সার প্রতিরোধ কারী ফল হিসেবেই বেশি পরিচিত। করোসল ফলে রয়েছে অ্যানোনাসিয়াস অ্যাস্ট্রোজেনিন, যা ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে। শরীরে ক্যানসার কোষের আক্রমণ কমাতে অনেকে কেমোথেরাপি নিয়ে থাকেন। করোসল ফলে থাকা উপাদান কেমোথেরাপির চাইতে দশ হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী।
নিয়মিত তিন বেলা খাবার খাওয়ার আধা ঘন্টা পর করোসল ফল বা করোসল ফলের শরবত পান করলে শরীরে ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি পেতে পারে না, ক্যান্সার কোষ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ব্রাজিলের একটি গ্রামে পরীক্ষিতভাবে ক্যান্সার প্রতিরোধী করোসল ফল চাষ হয়। ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে করোসল ফল সাহায্য করে তাই এ ফলের চাহিদা ও দাম আকাশ চুম্বি । অর্থাৎ ওপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে করোসল ফল ক্যান্সার প্রতিরোধী।
করোসল ফল কীভাবে কাজ করে
করোসল ফলে রয়েছে অ্যানোনাসিয়াস অ্যাস্ট্রোজেনিন, যা ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে। শরীরে ক্যানসার কোষের আক্রমণ কমাতে অনেকে কেমোথেরাপি নিয়ে থাকেন। করোসল ফলে থাকা উপাদান কেমোথেরাপির চাইতে দশ হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী। করোসল ফল ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে কাজ করে।
করোসল ফল পাকা অথবা কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায়। অনেকে পাকা করোসল ফলের শরবত তৈরি করে খান। করোসল ফল টক স্বাদের। তাই অনেকে এ ফল কাঁচায় খেয়ে ফেলেন। করোসল ফল দেখতে বাহিরে থেকে কাঁঠালের মত আর ভিতরে আতা ফলের মত। করোসল ফল নিয়মিত খেলে আমাদের মানসিক চাপ কমে যাবে, দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
করোসল কিভাবে খাবেন
করোসল জানার পর আপনি ভাবতে পারেন যে করোসল কিভাবে খাবেন? করোসল খাওয়ার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। করোসল ফল কাটাযুক্ত। এর ওপরের অংশ অপসারণ করে ভিতরের সাদা অংশটি খেতে হয়। ভিতরে সাদা অংশটি খাওয়ার সময় এর মধ্যে থাকা বীজ অপসারণ করা উচিত। কারণ করোসলের বীজে কিছু বিষাক্ত উপাদান থাকে যা আমাদের দেহের ক্ষতি করতে পারে। করোসল কিভাবে খাবেন – নিচে সিডি তুলে ধরা হলো :
- করোসল ফল পাকা খেতে পারলে বেশি ভালো। উপরের অংশটি অপসারণ করে বীজ অপসারণ করে আপনি পাকা করোসল ফলটি খেতে পারবেন।
- করোসল পাতার চা তৈরি করে আপনি করোসল খেতে পারবেন। এই আর্টিকেলের উপরের অংশে কিভাবে করোসল পাতার চা তৈরি করতে হয় সেটি আলোচনা করা হয়েছে।
- পাকা বা কাঁচা করোসল ফলের শরবত তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে। আপনি চাইলে পাকা বা কাঁচা করোসল ফলের শরবত তৈরি করে ফ্রিজিং করে বেশ কয়েকদিন খেতে পারেন।
- করোসলের সালাদ তৈরি করে খাওয়া যায়। সালাদ তৈরি সময় আপনি শুধু করোসল ব্যবহার করতে পারেন অথবা অন্যান্য ফলের সাথে করোসল মিশিয়ে সালাদ তৈরি করতে পারেন।
বাংলাদেশে করোসল ফলের গুরুত্ব কেমন
আপনার প্রশ্ন যদি হয়ে থাকে বাংলাদেশে করোসল ফলের গুরুত্ব কেমন? তাহলে আমি বলব বাংলাদেশে করোসল ফলের গুরুত্ব অনেক। আর বাংলাদেশে করোসল ফলের গুরুত্ব দিন দিন বেড়েই চলছে। কারণ করোসল ফল মরণব্যাধি ক্যান্সার প্রতিরোধী। এছাড়াও করোসল ফল আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আবার করোসল ফলের দাম অনেক বেশি তাই অনেকেই লোভে পড়ে ফল চাষ করতে চান।
বাংলাদেশের মানুষের রোগ বালাইয়ের অভাব নেই। আর করোসল ফল আমাদের বিভিন্ন রোগ থেকে পরিত্রান পেতে সাহায্য করে। তাই বাংলাদেশে করোসল ফলের গুরুত্ব অনেক। করোসল ফলের দাম অনেক বেশি হওয়ায় অনেকে আর্থিকভাবে লাভবান হতে করোসল ফল চাষ করে। তাদের কাছে করোসল ফলের গুরুত্ব অনেক। করোসল ফলের বিভিন্ন ঔষধি ও উপকারী গুনাগুনের কারণে এবং এর আকাশচুম্বী দামের কারণে বাংলাদেশে করোসল ফলের গুরুত্ব অনেক।
FAQs:
১। প্রশ্ন: করোসল ফলের স্বাদ কেমন?
উত্তর: করোসল ফলের স্বাদ কিছুটা মিষ্টি কিছুটা টক।
২। প্রশ্ন: করোসল ফল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী?
উত্তর: হ্যাঁ, করোসল ফল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। কারণ করোসল ফলে থাকা বিভিন্ন উপাদান ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৩। প্রশ্ন: বাড়িতে করোসল চাষ করা যাবে?
উত্তর: হ্যাঁ, পর্যাপ্ত যত্ন ও করোসল চাষের প্রয়োজনীয় আবহাওয়া থাকলে করোসল বাড়িতে চাষ করা যাবে।
৪। প্রশ্ন: প্রতিদিন করোসল ফলের রস খাওয়া যাবে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, প্রতিদিন করোসল ফলের রস খাওয়া যাবে। যদি আপনার নির্দিষ্ট কোন শারীরিক সমস্যা না থাকে তাহলে প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পরিমাণ করোসল ফলের রস খাওয়া যাবে ।
৫। প্রশ্ন: করোসল গাছের বীজ কোথায় পাবো?
উত্তর: করোসল গাছের বীজে আপনি বিদেশ থেকে আমদানি করতে পারেন অথবা বিভিন্ন অনলাইন পেজ থেকে ক্রয় করতে পারেন।
লেখকের শেষ মন্তব্যঃ করোসল ফলের দাম কত
আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে করোসল ফলের দাম কত-করোসল ফল কি ক্যান্সার প্রতিরোধী এই বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আশেপাশের সকল তথ্য আমাদের ওয়েব সাইটে নিয়ে নিতে পাবলিশ করা হয়। আপনি যদি আপনার জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করেন।