ই পাসপোর্ট করার নিয়ম

ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম

 আপনারা অনেকেই ই পাসপোর্ট এর আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে  আগ্রহী | যে কারণে আজকের আমাদের এই আর্টিকেল | পুরো আর্টিকেল জুড়ে আপনারা যদি আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে আপনারা ই পাসপোর্ট সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানতে পারবেন | যেগুলো থেকে আপনি পরবর্তীতে নিজে নিজেই ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন | এক্ষেত্রে আপনার দালাল বা অন্য কারো সাহায্য প্রয়োজন হবে না | 

 ই পাসপোর্টে আবেদন করতে হলে আপনাকে বেশ কিছু বিষয় জানতে হবে | এবং আপনার বেশ কিছু ডকুমেন্ট এর প্রয়োজন হবে | তো চলুন বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত তথ্য |

ই পাসপোর্ট করার নিয়ম

 ই পাসপোর্ট করতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে ই পাসপোর্ট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে | ওয়েবসাইট লিংক :-   এই লিংকে প্রবেশ করার পরে আপনারা নিম্নে দেওয়া ছবির মত একটি পেজ দেখতে পাবেন |  অতঃপর আপনারা  আপনাদের তথ্য অনুযায়ী বা আপনাদের থানা জেলা অনুযায়ী এটা পূরণ করবেন | অতঃপর কন্টিনিউ অপশনে ক্লিক করবেন |

 কন্টিনিউ অপশনে ক্লিক করার পরে আপনাকে এমন একটি পেজে নিয়ে আসা হবে | এই পেজে এসে আপনারা আপনাদের ইমেইল এড্রেসটি বসিয়ে দেবেন | অতঃপর ক্যাপচার করটি পূরণ করবেন তারপরে কন্টিনিউ এ ক্লিক করবেন | চলুন আবেদন করার পূর্বে আমরা জেনে আসি আমাদের কি কি প্রয়োজন হতে পারে সে সম্পর্কে |

 ই পাসপোর্ট করতে কি কি  ডকুমেন্ট লাগে

 ই পাসপোর্ট করতে হলে আপনার বেশ কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে | যে সকল ডকুমেন্টগুলো ছাড়া আপনি পাসপোর্ট করতে পারবেন না | অনলাইনে আবেদন করার পরে আপনার ছবি এবং বায়োমেট্রিক তথ্য ( ফিঙ্গারপ্রিন্ট ) দেওয়ার জন্য আপনাকে আপনার নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে | তখন যে সকল ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবে তার নিচে উল্লেখ করা হলো |

  •  অ্যাপ্লিকেশন সামারি এর প্রয়োজন হবে | অর্থাৎ আপনি অনলাইনে যে আবেদন করেছিলেন সে আবেদন এর পেজটি প্রয়োজন হবে |
  •  অতঃপর জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হবে | আর  আপনার যদি ১৮ বছর  বয়স না হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনার জন্ম নিবন্ধন এবং পিতা-মাতার  nid card প্রয়োজন হবে |
  •  নাগরিক সনদপত্রের প্রয়োজন হবে |
  •  আপনি পেশাজীবী নাকি করেন সে সম্পর্কে একটি প্রমাণ পত্র প্রয়োজন হবে |
  •  এছাড়াও বিদ্যুৎ / গ্যাস  বিলের কাগজ প্রয়োজন হবে |

 মূলত আবেদন করার জন্য এই সকল ডকুমেন্টসগুলো প্রয়োজন হয়ে থাকে |

 পাসপোর্ট এর ধরন বাছাই

আমরা ইতিমধ্যে আপনাদের কাছে দুইটি ধাপ শেয়ার  করেছি | তারপরে আপনারা  ইমেইল দিয়ে কন্টিনিউ ক্লিক করার পরে আপনাদের কাছে এমন একটি পেজ আসবে | সেই পেজ থেকে আপনাদের নির্বাচন করতে হবে আপনি অরিজিনারি পাসপোর্ট করবেন অর্থাৎ সাধারণ নাগরিক হিসেবে | নাকি সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে অফিশিয়াল পাসপোর্ট করবেন | আপনি যদি সাধারন মানুষ হয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে আপনি অর্ডিনারি পাসপোর্টে   সিলেক্ট  করবেন |

 অতঃপর আপনারা সেভ এন্ড কন্টিনিউ এ ক্লিক করবেন | অতঃপর আপনাদের ই  পাসপোর্টে আবেদন করার জন্য একটি পেজ আসবে নিম্নে সে সম্পর্কে দেওয়া হল |

 ই পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ

 ই পাসপোর্টে আবেদন করার ফরম আসার পরে আপনারা সেখানে আপনার সঠিক তথ্য দিয়ে অর্থাৎ যে পাসপোর্ট করবে তার সকল সঠিক তথ্য গুলো দিয়ে পূরণ করতে হবে | যদি আপনারা নিজের জন্য আবেদন করেন সেক্ষেত্রে এপ্লাই ফর মাইসেলফ এ  ক্লিক করবেন | আর যদি অন্য কারো জন্য আবেদন করেন সেক্ষেত্রে এখানে ক্লিক করবেন না | তারপরে আপনি আপনার পর্যায়ক্রমে সকল তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করবেন | যেমন নিম্নের পিকচারটির মাধ্যমে তুলে ধরা হলো |

 সঠিকভাবে তথ্যগুলো দেওয়া হলে আপনি সেভ এন্ড কন্টিনিউ বাটনটিতে ক্লিক করবেন |

 ঠিকানা নির্বাচন করুন

 এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ | কারণ এই ঠিকানা অনুযায়ী আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে | সুতরাং ঠিকানাটি খুবই খুবই গুরুত্বপূর্ণ | আপনার স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা যদি একই থাকে তাহলে প্রেজেন্ট এড্রেস সেমস পার্মানেন্ট এ ক্লিক করবেন | আর যদি অন্য হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি দুইটা ঠিকানায় আলাদা আলাদা ভাবে দেবেন |

 আইডি ডকুমেন্ট

 আইডি ডকুমেন্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা যেহেতু নতুন আবেদন করছি সে ক্ষেত্রে আমরা নিচে যেমন ছবি দেওয়া রয়েছে সেখানে ক্লিক করব |

 অতঃপর আপনারা পরের ধাপে যাবেন | এবং সেখানে গিয়ে পিতা-মাতার তথ্য প্রদান করবেন | তাদের নাম, তাদের পেশা, জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার দিয়ে |

 বৈবাহিক স্ট্যাটাস

 পিতা মাতার তথ্য পূরণ করার পরে আপনারা বৈবাহিক স্ট্যাটাস পূরণ করবেন | বৈবাহিক স্ট্যাটাসে গিয়ে আপনারা নিম্নের ছবির মত একটি অপশন দেখতে পারবেন | সে ক্ষেত্রে আপনি আপনার সঙ্গে মিলিয়ে যেটা সঠিক সেটা তে ক্লিক করবেন |

ইমারজেন্সি কন্টাক্ট

বৈবাহিক স্ট্যাটাস দেওয়ার পরে ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট এর জন্য আপনার ভাই, মা, বাবা ইত্যাদি  আত্মীয়র ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে | জরুরী প্রয়োজনে আপনি ব্যতীত অন্য কারো সাথে যেন যোগাযোগ করা যায় তার কন্টাক্ট নাম্বার এবং ঠিকানা এর প্রয়োজন হবে | অর্থাৎ আপনি ব্যতীত যেন জরুরি প্রয়োজনে যেকোনো একজনের সঙ্গে যেন কন্টাক্ট করা যায় সে কারণে এটা নেয়া হয় | সে ক্ষেত্রে আপনি আপনার ভাইয়ের, ডকুমেন্টস অথবা বাবার, অথবা মায়ের অথবা যেকোনো কারো দিতে পারেন |

 পাসপোর্ট এর ধরন বাছাই করুন

 ইমারজেন্সি কন্টাক্ট দেওয়া হয়ে গেলে আপনাকে পাসপোর্ট এর ধরন বাছাই করতে হবে | অর্থাৎ আপনি যদি 5 বছরের জন্য 48 পেজের পাসপোর্ট করতে চান সেক্ষেত্রে সেটাতে ক্লিক করতে হবে | আপনি যদি 10 বছরের জন্য 48 পৃষ্ঠার পাসপোর্ট করতে চান সেখানে ক্লিক করবেন | অথবা আপনি যদি 10 বছরের জন্য 64 পেজ করতে চান তাহলে সেখানে | অথবা আপনি যদি 5 বছরের জন্য 64 পৃষ্ঠার করতে চান সে ক্ষেত্রে সেখানে ক্লিক করবেন | অর্থাৎ এই অপশন গুলোর মধ্যে থেকে আপনি যেমন করতে চান সেখানে ক্লিক করবেন | নিম্নে ছবি প্রদান করা হলো |

 সঠিক তথ্য দেওয়া হলে সেভ এন্ড কন্টিনিউ ক্লিক করবেন | অতঃপর আপনাকে আরেকটি নতুন পেজে নিয়ে যাওয়া হবে |

 ডেলিভারি ধরন সিলেক্ট করুন

 ডেলিভারির ধরন  সিলেক্ট করার মাধ্যমে নির্ভর করবে আপনি পাসপোর্টটি কতদিনের মধ্যে পাবেন | তাই আপনার যেমন প্রয়োজন তেমন অনুযায়ী ডেলিভারির ধরন সিলেক্ট করুন | যদি রেগুলার করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনি ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে পাবেন এবং ২৫ দিনও লাগতে পারে | যদি আপনি জরুরী ভিত্তিতে পাসপোর্ট নিতে চান সে ক্ষেত্রে আপনি এক্সপ্রেস ডেলিভারিতে ক্লিক করবেন | সেক্ষেত্রে আপনি তিন থেকে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন |  এটা সম্পূর্ণ হলে পরবর্তী ধাপে গিয়ে পাসপোর্ট ফি প্রদান করতে হবে |

 পাসপোর্ট ফি প্রদান

 আপনারা হয়তো ইতিমধ্যে দেখেছেন পাসপোর্ট ফি কত টাকা |  রেগুলার পাসপোর্ট ১০ বছর মেয়াদ ৪৮ পেজের জন্য পাঁচ হাজার সাতশো পঞ্চাশ টাকা প্রদান করতে হবে | পাসপোর্ট এর মেয়াদ এবং পৃষ্ঠার উপর নির্ভর করে আপনার ফি নির্ধারণ করা হবে | আপনারা নিজেরাই এটা দেখতে পারবেন | অতঃপর আপনারা আবেদন কপিটি প্রিন্ট করে নেবেন |

 আবেদন কপি প্রিন্ট

 সকল ধাপগুলো সঠিকভাবে হয়ে থাকলে আপনারা একেবারে শেষ প্রান্তে চলে এসেছেন |  আপনাদের আবেদন সম্পন্ন হওয়ার পরে সাবমিট করার পরে সামারি এবং আবেদন কপি ডাউনলোড করার অপশন আসবে |  ব তারপরে আপনারা এখান থেকে প্রিন্ট অথবা পিডিএফ আকারে সংগ্রহ করে রাখতে পারবেন | পরবর্তীতে এটার প্রয়োজন হবে | নিচে উল্লেখিত ছবির মত দেখতে পাবেন সেখান থেকে আপনারা প্রিন্ট অথবা ডাউনলোড করে রাখতে পারবেন |

 ই পাসপোর্ট কত দিনের মধ্যে হাতে পাওয়া যায়

 আপনি অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার পরে আপনার নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ছবি তোলার পরে এবং স্বাক্ষর করার পরে মাত্র ১৫ থেকে ২০ কর্ম দিবসের মধ্যে ই পাসপোর্ট আপনি হাতে পাবেন | অর্থাৎ  আপনার আবেদনের সকল প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হওয়ার পরে আপনাকে ১৫ থেকে ২০ দিন অপেক্ষা করতে হবে | তাহলে আপনি আপনার ই পাসপোর্টটি হাতে পেয়ে যাবেন |

 দালাল ছাড়া কি পাসপোর্ট হয় না

 আপনারা অনেকেই এই  প্রশ্নটি করে থাকেন | আপনারা অনেকে ভাবেন দালাল ছাড়া আপনার কোন ভাবেই পাসপোর্ট নিতে পারবেন না | কিন্তু আসলে এটা সত্যি নয় | ই পাসপোর্ট এর জন্য দালালের কোন প্রয়োজনই হয় না যদি আপনার সকল ডকুমেন্টস সঠিক থাকে | আপনি সবকিছু অনলাইন এর মাধ্যমেই সম্পূর্ণ করতে পারবেন | পরবর্তীতে আপনাকে আপনার নিকটস্থ ই পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে এবং আপনার ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে অতঃপর আপনার ছবি তোলা হবে এবং স্বাক্ষর নেওয়া হবে | তারপরে  15 থেকে 20 দিনের মধ্যে আপনার পাসপোর্টটি আপনি হাতে পেয়ে যাবেন | এখানে দালালের কোন প্রয়োজনই নেই | সুতরাং দালালকে অযথা টাকা দিয়ে পাসপোর্ট করবেন না | নিজে সতর্ক হোন এবং অন্যকে সতর্ক করুন |

Scroll to Top